মিরসরাইয়ে সাপের দংশনে ২জনের মৃত্যু

ডেস্ক রিপোর্ট» মিরসরাই উপজেলা জুড়ে সাপ আতঙ্ক রয়েছে মানুষ। বিষাক্ত সাপের আনাগোনা এ বছর অনেকটাই বেড়ে গেছে। ৯ দিনের ব্যবধানে সাপের দংশনে এক শিশু ও এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ এখানকার হাসপাতালগুলোতে প্রতিশেধক ইনজেকশন না থাকায় সময় মতো চিকিৎসা নিতে পারছে না আক্রান্তরা। এতে অকালেই প্রাণ হারাতে হচ্ছে অনেককে। প্রায়শ উপজেলার কোথাও না কোথাও সাপে কাটার ঘটনা ঘটছে।

জানা গেছে, ২০ সেপ্টেম্বর উপজেলার ১৫ নম্বর ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকায় সাপের দংশনে মো. আনোয়ার হোসেন নামের এক যুবক মারা গেছেন। নিহত আনোয়ার ওই এলাকার হামিদ আলী ভূঁইয়া বাড়ির মৃত নুরুল গনির কনিষ্ঠ পুত্র। তার স্ত্রী ও আবদুল্লাহ আল সাবিদ নামে ৯ মাস বয়সের একটি ছেলে রয়েছে।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর উপজেলার নাজিরপাড়া এলাকায় সাপের দংশনে আবদুল্লাহ আল নোমান নামে ৬ বছরের এক ফুটফুটে শিশু মারা গেছে। নোমান ওই এলাকার মিয়া বাড়ির ওমান প্রবাসী আব্দুল মতিনের একমাত্র ছেলে।

সংবাদকর্মী শাহদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, আমার ঘর থেকে ৩টি বিষাক্ত সাপ মেরে ফেলা হয়েছে। ঘরের মধ্যে আরো আটটি সাপের খোলস পেয়েছি। এখন আমি আমার সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি। শুধু শাহদাত নয় এভাবে সন্তান ও পরিবারের লোকজন নিয়ে সাপ আতঙ্কে দিন কাটছে অনেকের।

জানা গেছে, বনাঞ্চল উজাড় হওয়ার কারণে সাপগুলো তাদের আবাসস্থল ছেড়ে এখন লোকালয়ে বিচরণ করছে। পাহাড়ি সাপগুলো এখন লোকালয়ে নেমে এসেছে।

বেশির ভাগ বিষাক্ত সাপ গ্রামে থাকলেও এখানকার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিশেধক ইনজেকশন নেই। ইনজেকশন রয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সাপে দংশনের পর একজন রোগীকে নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে। সড়কে যানজট থাকলে তো কথাই নেই। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যদি ইনজেকশন থাকতো তাহলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে হয়তো রক্ষা করা সম্ভব হত।

সাপের দংশনে অকালেই ঝরে যাওয়া শিশু আব্দুল্লাহ আল নোমানের পিতা আবদুল মতিন অভিযোগ করেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে যদি ইনজেকশন থাকতো তাহলে হয়তো আমার ছেলেকে বাঁচানো যেত। আমরা ছেলেকে নিয়ে পাগলের মতো দৌড়েছি এখানকার হাসপাতালগুলোতে। কিন্তু ইনজেকশন না থাকায় বাঁচানো সম্ভব হয়নি। চট্টগ্রাম মেডিকেলে যাওয়ার সময় যানজটে আটকা পড়ি। মেডিকেলে পৌঁছানোর আগেই আমার ছেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আমি সরকারে কাছে অনুরোধ করবো যাতে উপজেলার হাসপাতালগুলো সাপের দংশনে প্রতিষেধক ইনজেকশন রাখা হয়।

উপজেলার যেকোনো জায়গা থেকে চট্টগ্রাম শহরে যেতে কমপক্ষে দুই ঘণ্টা হাতে রাখতে হয়। সাপের বিষে একটি প্রাণ নিভিয়ে দিতে আধঘণ্টাই যথেষ্ঠ। অথচ মিরসরাইয়ের কোনো মানুষকে সাপে কাটলে দৌড়াতে হয় ৮০ কিলোমিটার দুরে।

এক চিকিৎসক বলেন, বিষাক্ত সাপের ছোবল হলে সর্বোচ্চ আধাঘণ্টার মধ্যে ইনজেকশনটি পুশ করতে হবে। নইলে বিপদ।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উন্নয়ন কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ্ব জসীম উদ্দিন বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটার প্রতিষেধক ইনজেকশন রাখার বিষয়ে আগামী মিটিংয়ে গুরুত্বের সাথে আলোচনা করা হবে।

প্রকাশক সম্পাদক : জাহাঙ্গীর কবির লিটন
এলাহী মার্কেট , ২য় তলা, বড় মসজিদ গলি, ট্রাংক রোড,ফেনী।
jagofeni24@gmail.com
© 2016 allrights reserved to JagoFeni24.Com | Desing & Development BY PopularITLtd.Com, Server Manneged BY PopularServer.Com