দানের গুরুত্ব অসীম

ইসলাম ডেস্ক» ইসলাম ধর্মে দান বা সদকার গুরুত্ব অপরিসীম। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যারা দান করে গোপন রাখে এবং গ্রহীতাকে খোটা ও কষ্ট না দেয় তারা পুরস্কৃত হবে, তাদের কোনো ভয় বা পেরেশানি থাকবে না।(সূরা বাকারা আয়াত-২৬৩)

মহান আল্লাহ বলেন, তুমি যা দান করবে আমি এর প্রতিদান অবশ্যই দেবো।

প্রাচুর্যের পঞ্চসূত্রের একটি হল দান, বৈষয়িক ও আত্মিক প্রাচুর্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দান পাঁচভাবে ভূমিকা রাখে।

* দান উপার্জনকে শুদ্ধ করে ।

* দান পাপ মোচন করে ।

* বালা-মুসিবত দূর করে অকল্যাণের ৭০টি দরজা বন্ধ করে দেয়।

* দান দারিদ্র্য বিমোচন করে এবং দাতার অন্তরে তৃপ্তি দান করে।

* দান আয়-রুজি ও সম্পদে বরকত দেয়।

দান করার জন্য ধনী হওয়ার প্রয়োজন নেই, ইচ্ছাই যথেষ্ট। দান শুধু অর্থ বা সম্পদ প্রদানে সীমাবদ্ধ নয়। কারো শুভ কামনা, সুন্দর ব্যবহার, সুপরামর্শ, পথ হারাকে পথ দেখানো, পথ থেকে অনিষ্টকারী বস্তু সরিয়ে ফেলা- এ জাতীয় সকল কর্মই দান। দান কমালে প্রতিদানও কমে যাবে।

আল্লাহ প্রতিদানের আশা না করে দান করাকে খুব বেশি পছন্দ করেন। আল্লাহ প্রতিটি শর্তহীন দানের প্রতিদান কমপক্ষে ৭০০ গুণ, প্রয়োজনে আরও বেশি দিয়ে থাকেন। দান অনেকভাবে মানুষকে নিরাপদে রাখে এবং মানুষের জীবনে সমৃদ্ধি আনে। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা করা হল :

* দান কিভাবে মানুষের জীবনে বৈষয়িক সমৃদ্ধি আনে তার একটি ঘটনা মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে। হযরত আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- এক ব্যক্তি মাঠে অবস্থান করছিল। এমতাবস্থায় মেঘের মধ্যে একটি শব্দ শুনতে পেল, অমুকের বাগানে পানি বর্ষণ কর, অতঃপর মেঘমালা ঐ বাগানের দিকে সরে গেল এবং ঐ বাগানে পানি বর্ষণ হল, ঐ ব্যক্তি বাগানের মালিককে জিজ্ঞাসা করলো, তুমি এমন কি কাজ কর যার বদৌলতে মেঘমালাকে তোমার বাগানে পানি বর্ষণ করার জন্য নির্দেশ করা হল। বাগানের মালিক বললো আমি বাগানের ফসলকে তিনভাগে ভাগ করি, একভাগ দান করি, একভাগ আমার পরিবারের জন্য ব্যয় করি এবং একভাগ বাগানের খরচের কাজে ব্যবহার করি(সহীহ মুসলিম)।

* দান কিভাবে মানুষের আত্মিক সমৃদ্ধি আনে তার একটি সত্য ঘটনা আছে- কামেল বুজুর্গ জুন্নুন মিসরি হজ্ব পালনকালে আরাফাতের ময়দানে মোরাকাবায় বসে শুনলেন এ বছর সর্বপ্রথম হজ্ব কবুল হয়েছে আহমেদ আশফাক নামে দামেস্কের একজন মুচির, যিনি হজ্বে আসেননি। বুজুর্গ জুন্নুন মিসরি কৌতূহলী হলেন- রহস্যটা কি? তিনি দামেস্কে গিয়ে ঐ মুচিকে আবিষ্কার করে ঘটনা বললেন এবং জানতে চাইলেন হজ্ব নিয়ে মুচির অভিমত। মুচি বললেন, সে গত ৪০ বছর ধরে তার উপার্জন থেকে হজ্ব করার নিয়তে টাকা জমা করে এ বছরই হজ্বে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এরই মধ্যে একটি মজার ঘটনা ঘটলো। একদিন তার ছোট ছেলে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে কাঁদতে কাঁদতে এসে বলল, বাবা ওদের ঘরে মাংস রান্না করেছে, আমি একটু মাংস খেতে চেয়েছি, আমাকে মাংস দেয়নি বরং আমাকে চলে যেতে বলেছে। শুনে মুচি আহত হলেন এবং প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে জানতে চাইলেন কেন এমন নিষ্ঠুর আচরণ করা হল? প্রতিবেশী বলল, ভাই ছেলে-মেয়েদের নিয়ে দুদিন ধরে অনাহারে আছি, নিরুপায় হয়ে মাঠের একটি মরা ছাগল থেকে কিছু মাংস কেটে এনে রান্না করেছি, আমরা ক্ষুধার জ্বালায় মরা ছাগল খাবো, তোমার ছেলেকে কেন খাওয়াবো? জীবিত হলে অবশ্যই খাওয়াতাম। ঘটনা শুনে মুচি আহত হলেন! হজ্বের জন্য জমানো সমস্ত অর্থ তাদের দান করলেন, হজ্বে গেলেন না। সে বছর আল্লাহ সর্বপ্রথম তার হজ্ব কবুল করলেন যা কামেল বুজুর্গ জুন্নুন মিসরি আরাফাতের ময়দানে মোরাকাবায় বসে জানলেন- এ বছর সর্বপ্রথম হজ্ব কবুল হয়েছে আহমেদ আশফাক নামে দামেস্কের একজন মুচির, যিনি হজ্বে আসেন নি।

উপরোক্ত দুটি ঘটনা প্রমাণ করে বৈষয়িক ও আত্মিক উভয় ক্ষেত্র দানের মাধ্যমেই সমৃদ্ধ হয়।

নিম্নে দান সম্পর্কিত কয়েকটি সহীহ হাদিস তুলে ধরা হলো :

১) হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন-যদি আমার নিকট উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণও থাকে, তবে আমি তখনই সন্তুষ্ট হব যখন তিন দিন শেষ হতে না হতেই তা নিঃশেষ হয়ে যায়, তার সামান্য পরিমাণ ব্যতীত যা ঋণ পরিশোধের জন্য রাখি। (অর্থাৎ ঋণ পরিশোধের জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন ঐ পরিমাণ রেখে বাকি অর্থ দান করে দেয়াই আমি পছন্দ করি। (সহীহ বুখারী)

২) হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন-যখন আল্লাহর বান্দাগণ ভোরে ঘুম থেকে উঠে তখন দুজন ফেরেশতা অবতীর্ণ হন। তাদের একজন বলেন, হে আল্লাহ! তুমি দানকারীকে প্রতিদান দাও, আর একজন বলেন, হে আল্লাহ! তুমি কৃপণকে ধংস কর। (সহীহ বুখারী)

৩) হযরত আবু হুরাইরা(রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান, তুমি দান কর বিনিময়ে আমি তোমাকে দান করবো।(সহীহ বুখারী)

৪) হযরত আসমা (বিনতে আবী বাকর) (রাঃ) বলেন- রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে বলেছেন– তুমি দান করতে থাকবে তাতে হিসাব করবে না, যাতে আল্লাহ হিসাব করেন তোমাকে দান করতে। আর ধরে রেখো না, যাতে আল্লাহ তোমার ব্যাপারে ধরে রাখেন। তোমার সামর্থ্য অনুযায়ী সামান্য হলেও দান করবে। (সহীহ বুখারী, মুসলিম)

৫) হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বলেছেন-কারো আপন জীবনকালে এক দিরহাম দান মৃত্যু মুহূর্তে একশত দিরহাম অপেক্ষা অধিক।(আবু দাউদ, মিশকাত)

৬) হযরত উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, রাসূল(সাঃ) এর কোন কোন বিবি রাসূল (সাঃ)কে জিজ্ঞেস করেন, আমাদের মধ্য হতে কে প্রথমে আপনার সাথে মিলিত হবে? তিনি বলেন– তোমাদের মধ্যে যার হাত বেশি লম্বা। আয়েশা (রাঃ) বলেন, তারা কাঠের টুকরা দিয়ে নিজেদের হাত মাপতে লাগলেন। দেখা গেল, বিবি সওদার হাত সকলের তুলনায় লম্বা কিন্তু পরক্ষণে আমরা বুঝতে পারলাম, এখানে হাত লম্বা অর্থে বেশি বেশি দানকারীকে বুঝানো হয়েছে। আমাদের মধ্যে বিবি জয়নাব দানকে ভালোবাসতেন, বেশি বেশি দান করতেন এবং বিবিদের মধ্যে সবার আগে মৃত্যুবরণ করেছেন অর্থাৎ তিনিই প্রথমে মিলিত হয়েছেন। (সহীহ বুখারী)

৭) হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, (পূর্ব যামানার) এক ব্যক্তি বলল, অবশ্য অবশ্যই আমি কিছু দান করবো । অতঃপর সে তার দান নিয়ে বের হয় এবং না জেনে তা এক চোরের হাতে অর্পণ করে। লোকজন বলাবলি করতে লাগলো, একজন চোরকে দান করা হয়েছে। দাতা বিষয়টি জানতে পেরে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বললেন, আমি একজন চোরকেও দান করত পেরেছি। আবার ঐ ব্যক্তি বলল, অবশ্য অবশ্যই আমি আরও কিছু দান করবো। অতঃপর সে তার দান নিয়ে বের হয় এবং না জেনে তা এক পতিতার হাতে অর্পণ করলেন। লোকজন বলাবলি করতে লাগলো একজন পতিতাকে দান করা হয়েছে। দাতা বিষয়টি জানতে পেরে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বললেন, আমি একজন পতিতাকেও দান করতে পেরেছি। পুনরায় ঐ ব্যক্তি বলল, অবশ্য অবশ্যই আমি আরও কিছু দান করবো। অতঃপর তিনি তার দান নিয়ে বের হয়ে না জেনে তা একজন ধনীর হাতে অর্পণ করলো। লোকজন বলাবলি করতে লাগলো একজন ধনীকে দান করা হয়েছে। দাতা বিষয়টি জানতে পেরে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বললেন, আমি একজন চোর, একজন পতিতা ও একজন ধনীকে দান করতে পেরেছি।

অতঃপর একরাতে তাকে স্বপ্নে দেখানো হল, চোরকে দান করার কারণে সে চুরি থেকে বিরত থাকবে, পতিতাকে দান করার কারণে সে পতিতাবৃত্তি থেকে বিরত থাকবে আর ধনীকে দান করার কারণে সে নিজেও দান করতে শিখবে। (সহীহ বুখারী, মুসলিম)

৮) হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বলেছেন- বনি ইসরাইলের মধ্যে তিন ব্যক্তি ছিল একজন শ্বেত কুষ্ঠ রোগী, একজন মাথায় টাকপড়া আর একজন অন্ধ। আল্লাহ এদেরকে পরীক্ষা করতে ইচ্ছা করলেন এবং তাদের নিকট একজন ফেরেশতা পাঠালেন।

প্রথমে শ্বেত কুষ্ঠ রোগীর নিকট এসে ফেরেশতা জানতে চাইলেন, তোমার নিকট সর্বাধিক প্রিয় বস্তু কি? সে বলল, উত্তম রং ও উত্তম চর্ম এবং যে কারণে লোকে আমাকে ঘৃণা করে তা বিদূরিত হওয়া। ফেরেশতা তার গায়ে হাত বুলালেন, ফলে তার প্রতি ঘৃণার জিনিস দূর হল এবং তাকে উত্তম রং ও চর্ম দেওয়া হল । অতঃপর ফেরেশতা তার নিকট জানতে চাইলেন, তোমার নিকট সর্বাধিক প্রিয় মাল কি? সে বলল, উট। তাকে দশ মাসের গর্ভবতী একটি উট দেওয়া হল এবং ফেরেশতা দোয়া করলেন- আল্লাহ তোমার জন্য এতে বরকত দিন। আল্লাহর রহমতে একমাঠ উট হয়ে গেল।

তারপর মাথায় টাকওয়ালার নিকট এসে ফেরেশতা জানতে চাইলেন, তোমার নিকট সর্বাধিক প্রিয় বস্তু কি? সে বলল, উত্তম চুল এবং যে কারণে লোকে আমাকে ঘৃণা করে তা বিদূরিত হওয়া। ফেরেশতা তার মাথায় হাত বুলালেন, ফলে তার প্রতি ঘৃণার জিনিস দূর হল এবং তাকে উত্তম চুল দেওয়া হল। অতঃপর ফেরেশতা তার নিকট জানতে চাইলেন, তোমার নিকট সর্বাধিক প্রিয় মাল কি? সে বলল, গরু। তাকে একটি গর্ভবতী গাভী দেওয়া হল এবং ফেরেশতা দোয়া করলেন- আল্লাহ তোমার জন্য এতে বরকত দিন। আল্লাহর রহমতে এক মাঠ গরু হয়ে গেল।

তারপর অন্ধের নিকট এসে ফেরেশতা জানতে চাইলেন, তোমার নিকট সর্বাধিক প্রিয় বস্তু কি? সে বলল, আমার চোখের জ্যোতি ফিরিয়ে দিন যাতে আমি সবকিছু দেখতে পাই। ফেরেশতা তার চোখের উপর হাত বুলালেন, ফলে সে চোখের জ্যোতি ফিরে পেল এবং সবকিছু দেখতে পেল। অতঃপর ফেরেশতা তার নিকট জানতে চাইলেন, তোমার নিকট সর্বাধিক প্রিয় মাল কি? সে বলল, ছাগল। তাকে গর্ভবতী একটি ছাগল দেওয়া হল এবং ফেরেশতা দোয়া করলেন- আল্লাহ তোমার জন্য এতে বরকত দিন। আল্লাহর রহমতে একমাঠ ছাগল হয়ে গেল ।

অতঃপর ফেরেশতা কিছুকাল পর পরীক্ষা করার জন্য পূর্ব অবয়বে সেই শ্বেত কুষ্ঠ রোগীর নিকট এসে বললেন, আমি একজন দরিদ্র মিসকিন ব্যক্তি, সফরে আমার সব সামর্থ্য শেষ হয়ে গেছে, এমতাবস্থায় আল্লাহর রহমত ও আপনার সাহায্য ছাড়া আমার কোন উপায় নেই। আল্লাহর নামে আমি আপনার নিকট একটি উট ভিক্ষা চাচ্ছি, যিনি আপনাকে এহেন উত্তম রং ও চর্ম এবং এতসব উট দান করেছেন। সে দান করতে অস্বীকৃতি জানালো। তখন ফেরেশতা বললেন, মনে হয় আমি তোমাকে চিনি। তুমি দরিদ্র কুষ্ঠরোগী ছিলে না! যে কারণে লোকে তোমাকে ঘৃণা করতো । অতঃপর আল্লাহ তোমাকে ধন-সম্পদ দান করেছেন। সে বলল, এসব ধন-সম্পদ আমি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। তখন ফেরেশতা বলল, তুমি যদি মিথ্যাবাদী হও তবে আল্লাহ তোমাকে সে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিন।

অতঃপর ফেরেশতা পরীক্ষা করার জন্য পূর্ব অবয়বে টাকওয়ালার নিকট এসে বললেন, আমি একজন দরিদ্র মিসকিন ব্যক্তি, সফরে আমার সব সামর্থ্য শেষ হয়ে গেছে, এমতাবস্থায় আল্লাহর রহমত ও আপনার সাহায্য ছাড়া আমার কোন উপায় নেই, আল্লাহর নামে আমি আপনার নিকট একটি গরু ভিক্ষা চাচ্ছি, যিনি আপনাকে উত্তম চুল এবং এতসব গরু দান করেছেন। সে দান করতে অস্বীকৃতি জানালো। তখন ফেরেশতা বললেন, মনে হয় আমি তোমাকে চিনি। তুমি সেই দরিদ্র টাকওয়ালা! যে কারণে লোকে তোমাকে ঘৃণা করতো। অতঃপর আল্লাহ তোমাকে এত সুন্দর চুল ও ধন-সম্পদ দান করেছেন। সে বলল, এসব ধন-সম্পদ আমি উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছি। তখন ফেরেশতা বলল, তুমি যদি মিথ্যাবাদী হও তবে আল্লাহ তোমাকে সে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিন।

পরিশেষে ফেরেশতা পরীক্ষা করার জন্য পূর্ব অবয়বে অন্ধের নিকট এসে বললেন, আমি একজন দরিদ্র মিসকিন ব্যক্তি, সফরে আমার সব সম্পদ শেষ হয়ে গেছে, এমতাবস্থায় আল্লাহর রহমত ও আপনার সাহায্য ছাড়া আমার কোন উপায় নেই, আল্লাহর নামে আমি আপনার নিকট একটি ছাগল ভিক্ষা চাচ্ছি, যিনি আপনাকে চোখের জ্যোতি এবং এতসব ছাগল দান করেছেন। অন্ধ লোকটি বলল, আমি অন্ধ ছিলাম, আল্লাহ আমার চুল ফিরিয়ে দিয়েছেন। জীবিকার জন্য বেশুমার ছাগল দান করেছেন। তোমার যা ইচ্ছা নিয়ে যাও আর যা ইচ্ছা রেখে যাও। আল্লাহর কসম, আল্লাহর নামে আজ তুমি যা নিতে চাইবে আমি না করবো না । ফেরেশতা বললেন, তোমার সবকিছু তুমি রেখে দাও। আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের পরীক্ষা করা হল। আল্লাহ তোমার উপর সন্তুষ্ট আর তোমার দুই সাথীর প্রতি অসন্তুষ্ট। (মুত্তাফাকুন আলাইহ)

৯) হযরত আবু হুরাইরা(রাঃ)বলেন, রাসূলুল্লাহ(সাঃ)বলেছেন- মানুষের প্রত্যেক গ্রন্থির পরিবর্তে প্রতিদিনই যাতে সূর্য উদিত হয় একটি করে দান হওয়া উচিত। দু’ব্যক্তির মধ্যে ন্যায় বিচার করাও একটি দান, কোন মানুষকে কোন কাজে সহযোগিতা করাও একটি দান, কারো সাথে উত্তম কথা বলাও একটি দান, নামাজের প্রতিটি পদক্ষেপ একটি দান, রাস্তা হতে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেওয়াও একটি দান। (মুত্তাফাকুন আলাইহ)

১০) হযরত আবু যার গিফারী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুবহানাল্লাহ বলা একটি দান, আলহামদুলিল্লাহ বলা একটি দান, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা একটি দান এবং আল্লাহু আকবর বলা একটি দান। ভালো কাজের আদেশ একটি দান, মন্দ কাজের নিষেধ করাও একটি দান এবং স্ত্রী সংসর্গও একটি দান।(মুসলিম)

১১) হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, যে কোন মুসলমান একটি বৃক্ষ রোপণ করে অথবা কোন শস্য বপন করে এবং তা হতে মানুষ, পশু-পাখি কোন না কোন ভাবে উপকৃত হবে এবং এই গাছ থেকে ধারাবাহিকভাবে যত গাছ জন্মাবে যতদিন এই গাছের ধারাবাহিকতা থাকবে ততদিন এটা নিশ্চয় তার দান হিসেবে পরিগণিত হবে। (সহীহ বুখারী, মুসলিম)

১২) একটি হাদিসে আছে- কোন গরিব অসহায়কে পোশাক দান করলে সে পোশাক ঐ গরিব অসহায় যতদিন এই পোশাক পরিধান করে তার ইজ্জত-সম্মান রক্ষা করবেন ততদিন আল্লাহ দানকারীর ইজ্জত-সম্মান রক্ষা করবেন ।

প্রকাশক সম্পাদক : জাহাঙ্গীর কবির লিটন
এলাহী মার্কেট , ২য় তলা, বড় মসজিদ গলি, ট্রাংক রোড,ফেনী।
jagofeni24@gmail.com
© 2016 allrights reserved to JagoFeni24.Com | Desing & Development BY PopularITLtd.Com, Server Manneged BY PopularServer.Com