ডেস্ক রিপোর্ট» তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (আইসিটি) সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের জীবনমানে ইতিবাচক পরিবর্তনের মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে দেশের জনগণকে বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এগিয়ে যাওয়ার তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বিগত তিন বছরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের কার্যক্রম এবং আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনাও উপস্থাপন করেছেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের জানিয়েছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিপূর্ণ সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি আমাদের মেধাবী তরুণ-তরুণীদের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগযোগ্য বিশ্বমানের পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ চলছে।
প্রান্তিক পর্যায়ে পর্যাপ্ত কানেক্টিভিটি পৌঁছে দিতে কী কী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ সূত্র জানায়, প্রান্তিক পর্যায়ে পর্যাপ্ত কানেক্টিভিটি পৌঁছে দেয়া এবং সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগ, সংস্থা ও দফতরের সেবাকে একটি সমন্বিত প্লাটফর্মে নিয়ে আসতে এস্টাবলিশিং ডিজিটাল কানেক্টিভিটি শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এ প্রকল্পের মূল উপাদানসমূহ:
দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পোস্ট অফিস, কৃষি ও অন্যান্য সরকারি দফতর/প্রতিষ্ঠানকে ফাইবার অপটিক ক্যাবল সংযোগের আওতায় আনা।
১০ হাজার পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স (আর্থিক লেনদেন কেন্দ্র) ও ব্যবসা প্রসার (গ্রোথ সেন্টার) কেন্দ্রসমূহ সম্প্রসারণ।
৪ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১০ হাজার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ১ হাজার কলেজে (স্নাতক) শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন রেগুলেটর ল্যাব স্থাপন।
গবেষণা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগে একটি আধুনিক মাল্টিমিডিয়া ল্যাব স্থাপন।
সাইবার সিকিউরিটি প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে সাইবার সিকিউরিটি ল্যাব স্থাপন।
হার্ডওয়্যার শিল্পের বিকাশে নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানে ভিএলএসআই ল্যাব স্থাপন।
সব সরকারি দফতরে ই-সার্ভিস বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রস্তুতির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ সরবরাহ এবং ডিজিটাল কনটেন্ট ডেলিভারি, তথ্য সংরক্ষণ, সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, যন্ত্রপাতি ও নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা ইত্যাদির জন্য সুইচরুম সংস্কার ও সক্ষমতা বৃদ্ধি।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ল্যাব স্থাপন।
একটি প্লাটফর্মসহ পেমেন্ট গেটওয়ে প্রস্তুত করার মাধ্যমে সব বাণিজ্যিক ও আর্থিক সেবা সহজলভ্য করতে ব্যবসা প্রসার কেন্দ্রে ডিজিটাল মানি পে পয়েন্ট স্থাপন।
জনগণকে তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ইমার্জেন্সি সার্ভিস (৯৯৯) স্থাপন।
রাজধানীতে সেবামূল্যে ইন্টারনেট সেবা প্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি কেরতে দেশব্যাপী পয়েন্ট অব ইন্টারকানেক্ট স্থাপন
নাগরিক সেবা প্রদানে বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাইকরণ ও সব শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশনের জন্য বায়োমেট্রিক ডিভাইস সরবরাহ।
তরুণ প্রজন্মের জন্য বিভিন্ন পার্ক/হাটবাজার ইত্যাদি স্থানে ১ হাজার ওয়াই-ফাই জোন স্থাপন।
১২টি আইটি পার্ক ও ৬৪টি শিল্পকলা একাডেমিতে ডিজিটাল লাইব্রেরি ও মাল্টিমিডিয়া স্টোর স্থাপন।
জাতীয় সংসদ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডিজিটালাইজেশন এবং ই-পার্লামেন্ট স্থাপন।
ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্যে ইন্টারনেট সাসটেইনেবিলিটি সেন্টার স্থাপন।
ষষ্ঠ হতে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিজিটাল কনটেন্ট উন্নয়ন।
এছাড়া আগামীর প্রকল্পগুলোর মধ্যে থাকছে- টেকনোলজি ল্যাব অ্যান্ড সফটওয়্যার ফিনিশিং স্কুল, ইনফো সরকার-৩ প্রকল্প, স্মার্ট সিটি প্রকল্প, ইনটিগ্রেড ই- গভর্মেন্ট প্রকল্প, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিএলএসআই ল্যাব, জাতীয় নিরাপত্তা কেন্দ্র ও ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব, আইটি পার্ক ফর এমপ্লয়মেন্ট প্রকল্প, ডিজিটাল কানেক্টিভিটির প্রকল্প, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একাডেমি, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আইসিটি সেন্টার, জাতীয় সার্টিফিকেশন পরীক্ষা পদ্ধতি, জাতীয় সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি, ভার্চুয়াল ইউনিভার্সিটি অব মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ইনোভেশন প্রকল্পের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।