ডেস্ক রিপোর্ট» চাঁদপুরের হাইমচর নীল কমল উচ্চবিদ্যালয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের তৈরি করা ‘মানবসেতু’ পার হওয়ার ঘটনায় হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটওয়ারীসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আহম্মদ আলী নামে ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক এ মামলাটি দায়ের করেন।
হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান মামলার বিষয়টি দ্য রিপোর্ট টুয়ান্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বুধবার রাতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার তদন্তে উপ-পরিদর্শক মো. সুমনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মামলায় অভিযুক্ত অন্যরা হলেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. হুমায়ুন পাটওয়ারী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এম এ বাশার, প্রচার সম্পাদক ও বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মুনছুর আহমেদ পাটওয়ারী ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোশাররফ হোসেন।
এদিকে এ ঘটনায় বুধবার রাতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার রুহুল আমিনের নির্দেশে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) সৈয়দা সারোয়ার জাহানকে প্রধান করে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) চাঁদপুর আসছেন এবং ঘটনাস্থল তদন্তে হাইমচরে যাবেন বলে বিভাগীয় কমিশনার অফিস সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া হাইমচর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান পেদার নেতৃত্বে এমন অমানবিক ঘটনার প্রতিবাদে দুপুরে মানববন্ধনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, চাঁদপুরের হাইমচরের নীলকমলে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে ছাত্রদের পীঠের উপর হেঁটে ‘মানবসেতু’ পার হওয়ার ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নিন্দার ঝড় বইছে।
ছাত্রদের তৈরি ‘মানবসেতু’ পার হয়ে হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটোয়ারী খুশি হয়ে ৫ হাজার টাকাও দেয়।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) হাইমচর নীলকমল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোশাররফ হোসেন বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, ‘১৯২৮ সালে এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৬ সাল থেকে বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিদ্যালয়ের ছাত্ররা দুই পাশে দাঁড়িয়ে এবং মাঝখানে কয়েকজন ছাত্রকে শোয়া অবস্থায় রেখে ব্রিজ তৈরি করেন। আর এই ব্রিজে ছাত্রদের শরীরের উপর দিয়ে প্রধান অতিথি পাঁয়ে হেটে ব্রিজ পার হন। এটি এই বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য।’
প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, গত ২০১৪ সালে ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন নিজেও এই ধরনের ব্রিজের ওপর দিয়ে পাঁয়ে হেটে পার হয়েছেন। এ ছবি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষের বোর্ডে লাগানো রয়েছে। এছাড়াও হামইচর উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ২০০৩ সালে এ ধরনের ‘মানবসেতু’ পায়ে হেঁটে পার হন। গত কয়েক বছর ধরে এটি বন্ধ থাকলেও উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটোওয়ারীর সম্মানে এটি আবারও তৈরি করা হয়।