দুই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা: প্রধান আসামীদের বাদ দিয়ে চার্জশিট আদালতে

ডেস্ক রিপোর্ট» মাদারীপুরে ২ স্কুলছাত্রী ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায়, মামলা দায়েরের ১৫ মাস পর বাদীকে না জানিয়ে গোপনে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের অভিযোগ উঠেছে। মামলার প্রধান ৩ আসামিকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র আত্মহত্যার কথা উল্লেখ করে অভিযোগপত্র দাখিল করায় তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন নিহতের স্বজনরা।

বাদীপক্ষের আইনজীবীর দাবি, বিচার থেকে বাঁচাতে কৌশলে প্রকৃত আসামিদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

তবে ময়না তদন্ত রিপোর্টে ধর্ষণ নয় বিষপানে ২ স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

এদিকে মামলায় গ্রেপ্তার প্রধান আসামী রানা, রাকিব, শিপন, রফিকুল জামিনে রয়েছে। এছাড়া উজ্জ্বল শিকদার ইতিমধ্যে পালিয়ে সিঙ্গাপুর চলে গেছে।

২০১৫ সালের ১৩ আগস্ট স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মাদারীপুরের মস্তফাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া ও হ্যাপিকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা। এরপর ধর্ষণে শেষে বিষ খাইয়ে তাদের হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা।

ঘটনায় সদর থানায় ও আদালতে ১১ জনকে আসামি করে আলাদা দু’টি মামলা হলে অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব পায় মাদারীপুর সিআইডি পুলিশ। দীর্ঘ ১৫ মাস তদন্ত শেষে, গত ৭ নভেম্বর বাদীপক্ষকে না জানিয়ে মামলার প্রধান ৩ আসামি শিপন, রফিকুল ও সালমা বেগমের নাম বাদ দিয়ে রানা নাগাসী, মেহেদী, সজিব, আলামিন, নাজমুল, সাজন বেপারী, উজ্জ্বল শিকদার, রাকিব শিকদারকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয় বলে অভিযোগ স্বজনদের।

নিহত স্কুলছাত্রী সুমাইয়ার বাবা বিল্লাল শিকদার বলেন, আমি একাধিকবার সিআইডি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলেও তিনি আদালতে কোন অভিযোগপত্র দাখিল করেনি বলে আমাকে জানিয়েছেন। কিন্তু আমি আদালতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ওই সিআইডি কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম গোপনে আমাদের কাউকে না জানিয়ে প্রধান আসামীদের নাম বাদ দিয়ে এই অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেছেন।

নিহত অপর স্কুলছাত্রী হ্যাপীর মা মুক্তা বেগম বলেন, এভাবে দুটি মেয়েকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করল পাষণ্ডরা। কিন্তু সিআইডি কর্মকর্তা টাকার বিনিময়ে প্রধান আসামীদের নাম অভিযোগপত্র থেকে বাদ দিয়েছে। এভাবে যদি আসামীদের আইনের হাত থেকে রেহাই দেওয়া হয়, তাইলে এ ধরনে ঘটনা ভবিষ্যতে ঘটলে কেউ বিচার পাবে না।

মাদারীপুর সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, দুই বার ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। সুমাইয়া ও হ্যাপী বিষ পানে নিজেরাই আত্মহত্যা করেছে। প্রথমে সুমাইয়া বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে, তা দেখে অপর বান্ধবী হ্যাপীও সেই শোকে আত্মহত্যা করেছে। কি কারনে আত্মহত্যা করেছে তা জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা হেসে হেসে বলেন, রানার সাথে সুমাইয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সুমাইয়া রানাকে না পাওয়ার জেরে আত্মহত্যা করেছে বলে বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণে তা পাওয়া গেছে।

এদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবি ইয়াদ মোর্শেদ সজলের দাবি, ধর্ষণ শেষে হত্যার মামলায় আসামীদের কৌশলে আইনের হাত থেকে বাঁচাতে অভিযোগপত্রে তাদের নাম বাদ দিয়ে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করা হয়েছে। এছাড়া কি কারনে এই দুই স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে তারও বিস্তারিত কোন তথ্য এ অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেনি সিআইডি।

প্রকাশক সম্পাদক : জাহাঙ্গীর কবির লিটন
এলাহী মার্কেট , ২য় তলা, বড় মসজিদ গলি, ট্রাংক রোড,ফেনী।
jagofeni24@gmail.com
© 2016 allrights reserved to JagoFeni24.Com | Desing & Development BY PopularITLtd.Com, Server Manneged BY PopularServer.Com