নিজস্ব প্রতিবেদক» শিশু প্রিয়াংকার শরীরে মোমবাতির আগুন দিয়ে চ্যাকা দেয়া হতো। চিৎকার করলে হাসতো-আনন্দ পেতো অভিনেত্রী শাহানা । শিশু প্রিয়াংকার ওপর এভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বরতা চালাত তারই সৎমা অশ্লীল চলচিত্রের অভিনেত্রী শাহানা আক্তার ।
ফেনী সদর উপজেলার শর্শদীতে শিশু প্রিয়াঙ্কাকে নির্যাতনকারী শাহানা আক্তারকে পুলিশ আটক করে মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে শর্শদী এলাকার একটি জঙ্গল থেকে। এর আগে তার বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় পুলিশ মেয়েটির ওপর নির্যাতন এর আলামত খুঁজে পায়। এবং একটি ঘরে কয়েকটি জায়নামাজ (নামাজের বিছানা) দেখতে পায়।
আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে শাহেনী দোষ স্বীকার করে বলেন, তার ওপর জ্বিন ভর করতো সেসময় প্রিয়াঙ্কার শরীরে আগুনের ছ্যাকা দিলে জ্বিন চলে যেত। আর সে কারণেই তাকে তিনি আগুনের ছ্যাকা দিতেন।
তিনি আরো জানান, বাংলা চলচ্চিত্রের ৪৫টি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। বিগত ৪ বছর তিনি অভিনয় থেকে দূরে সরে এসেছেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জানে আলম জানান, মেয়েটি ওই এলাকার চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শাহেনী বেগমের বাসায় থাকতো। শাহেনী পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকলেও মাঝে মধ্যে এ বাড়িতে আসতেন। অপরদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, মেয়েটির গায়ে আগুনের ছ্যাকা দিয়ে জ্বিন তাড়ানোর নামে প্রতারণা করতো তারা।
শর্শদী এলাকার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শাহেনী তার বোন, বাংলা চলচ্চিত্রের অশ্লীল যুগে পার্শ্ব চরিত্রের অভিনেত্রী ছিল সে। বেপরোয়া জীবন যাপনের কারণে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন শাহেনী। স্বামীর সঙ্গেও তার যোগাযোগ নেই। এদিকে, ফেনী সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত ফয়জুল কবির বলেন, শিশুটির শরীরে অসংখ্য পোড়া ক্ষতস্থান রয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার দুপরে শিশুটিকে কাঁদতে দেখে জোহরা নামে এক নারী তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান।
জোহরা আক্তার জানান, ওই দিন দুপুরে শর্শদী ইউনিয়নের এলাকার পাঠান বাড়ি সংলগ্ন একটি সড়কে ক্ষত-বিক্ষত শরীর নিয়ে
কাঁদতে দেখে তাকে বাড়ি নিয়ে যান। পরে স্বামী জাহাঙ্গীর আলমের পরামর্শে তাকে আধুনিক ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করান তারা। মেয়েটি তার নাম প্রিয়াঙ্কা ও মায়ের নাম শাহেনী ছাড়া আর কিছু বলতে পারেনি।