ডেস্ক রিপোর্ট» আমিরুল মোমেনিন হযরত আবু হাফস ওমর বিন খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ(সাঃ) কে বলতে শুনেছি, নিয়ত হচ্ছে মানুষের সকল কাজের মূল, আর প্রত্যেক ব্যক্তি যা নিয়ত করেছে সে তাই পাবে।
অতএব, যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূল (সা.) এর জন্য হিজরত করেছে তার হিজরত আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূলের জন্যই হয়েছে, আর যার হিজরত ছিল দুনিয়া(তথা পার্থিব বস্তু)অর্জনের জন্যে কিংবা কোন মেয়েকে বিয়ের জন্যে তার হিজরত সেই ভাবেই বিবেচিত হবে, যে জন্য সে হিজরত করেছে। মোহাদ্দেসদের দুজন প্রধান ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ বিন ইসমাঈল বিন ইব্রাহিম বিন মোগীরাহ বিন বারদেযবাহ আল বুখারী এবং আবুল হাসান মুসলিম বিন হাজ্জাজ বিন মোসলেম আল কোশায়রী আন নিশাপুরী আপন আপন সহীহ গ্রন্থে এ বর্ণনাটি পেশ করেছেন।
* এই হাদিসটি ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, একদিন রাসূলে করিম (সা.) এর কাছে বসেছিলাম এমন সময় সেখানে হঠাৎ করেই এক লোক আমাদের সামনে উপস্থিত হন, যার পরিধানের কাপড় ছিল খুবই সাদা এবং চুল ছিল খুবই কালো। তার ওপর সফরের কোন লক্ষণই ছিল না। আমাদের মধ্যে কেউ তাকে আদৌ চিনত না। তিনি নবী(সা.) এর কাছে গিয়ে বসেন এবং নিজের হাঁটু তাঁর হাটুঁর সঙ্গে মিলিয়ে দেন এবং নিজের হাত তাঁর উরুতে স্থাপন করে বলেন, হে মোহাম্মদ! আমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলুন।
হুজুরে পাক (সা.) বলেন, ইসলাম হচ্ছে এই যে, তুমি সাক্ষ্য দিবে, আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আর কোন মা’বুদ নাই এবং মোহাম্মদ(সা)আল্লাহর রসূল, নামাজ কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে, রমজানে রোযা রাখবে এবং যদি সামর্থ্য থাকে তবে আল্লাহর ঘরে হজ্জ করবে।
তিনি বললেন, আপনি ঠিক বলেছেন। তার প্রতি আমাদের বিস্ময় হলো এ জন্যে যে, তিনি নিজে তাঁর কাছে জানতে চাচ্ছেন, আবার নিজেই তাঁর উত্তরকে সঠিক বলে ঘোষণা করছেন। তিনি বললেন, আচ্ছা আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন। তিনি বললেন, ঈমান হচ্ছে আল্লাহ তায়ালা, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর গ্রন্থসমূহ, তাঁর রসূলগণ ও পরকালের বিশ্বাস করা এবং তাকদিরের ভাল-মন্দকে বিশ্বাস করা। তিনি বললেন, আপনি সঠিক বলেছেন। তিনি বললেন, আমাকে এবার ইহসান সম্পর্কে বলুন। তিনি(রাসূল সাঃ) বললেন : তা হচ্ছে এই যে, তুমি এমনভাবে আল্লাহর এবাদত করবে যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছো, আর যদি তুমি তাঁকে দেখতে না পাও তবে একথা জানবে যে, তিনি অবশ্যই তোমাকে দেখছেন।
তিনি বললেন, কিয়ামত বিষয়ে আমাকে অবহিত করুন। তিনি বললেন, যাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে তিনি জিজ্ঞেসকারীর চেয়ে এ ব্যাপারে বেশি কিছু জানেন না। তিনি বললেন, কেয়ামতের লক্ষণ সমম্পর্কে বলুন। তিনি বললেন, তা হচ্ছে এই, দাসী (কোন কোন ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে মহিলা) নিজের মালিককে জন্ম দিবে, জুতা বিহীন ও বিবস্ত্র দরিদ্র রাখালরা উঁচু উঁচু ঘরবাড়ি বানাতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করবে।
তারপর লোকটি চলে গেলেন। আমি আরও কিছু সময় সেখানে বসে থাকলাম। এবার রাসূল (সা.) আমাকে বললেন, হে ওমর! তুমি কি জানো প্রশ্নকারী ব্যক্তিটি কে ছিলেন? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ভাল জানেন। তিনি বললেন, তিনি ছিলেন জিব্রাঈল (আঃ)। তিনি তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দিতে তোমাদের কাছে এসেছিলেন। [মোসলেম]
* হযরত আবু আব্দুর রহমান আব্দুল্লাহ বিন ওমর বিন খাত্তাব(রা.)থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ(সা.)কে বলতে শুনেছি, পাঁচটি খুঁটির উপর ইসলামের ভিত্তি রাখা হয়েছে। একথার সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই এবং মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল। নামাজ কায়েম করা, যাকাত আদায় করা, আল্লাহর ঘরে হজ্জ করা এবং রমযানের রোযা রাখা। [বুখারী ও মুসলিম]
৩টি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস
জাগোফেনী টুয়েন্টিফোরডটকম | আপডেট : May, 5, 2017, 12:41 pm