ডেস্ক রিপোর্ট» দেশের সকল সরকারি-বেসরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে (উচ্চ মাধ্যমিক) শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ৯ মে। প্রথম পর্যায়ে ভর্তির জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ৫ জুন। ভর্তি শুরু হবে ১৮ জুন, ১ জুলাই থেকে শুরু হবে ক্লাশ।
গত বছরের মতো এবারও অনলাইন ও এসএমএসের মাধ্যমে ভর্তির আবেদন করতে হবে। এবারও ভর্তিতে শিক্ষার্থীরা পছন্দের ১০টি কলেজের নাম দিতে পারবেন।
রবিবার (৭ মে) ‘২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা-২০১৭’ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিগত কয়েক বছরের মত এবারও এসএসসির ফলের ভিত্তিতেই একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। অনলাইন ও টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে এসএমএসে ভর্তির আবেদন করা যাবে ৯ মে থেকে ২৬ মে পর্যন্ত। অনলাইনে আবেদনের ঠিকানা www.xiclassadmission.gov.bd।
যারা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছেন তাদেরও এ সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, অনলাইনে ১৫০ টাকা আবেদন ফি জমা দিয়ে সর্বনিম্ন পাঁচটি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানের জন্য পছন্দক্রমের ভিত্তিতে আবেদন করা যাবে। অনলাইনে একবারই আবেদন করা যাবে।
এসএমএসের মাধ্যমে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রতি কলেজের জন্য ১২০ টাকা ফি দিতে হবে। এক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পছন্দক্রমে রাখতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। অনলাইন ও এসএমএসের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে আবেদন করা যাবে।
একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে তার মধ্য থেকে শিক্ষার্থীর মেধা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি মাত্র কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে বলে নীতিমালায় জানানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (৪ মে) এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এবার গড় পাসের হার ৮০ দশমিক ৩০ শতাংশ। আট বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে পাসের হার ৮১ দশমিক ২১ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডের দাখিলে পাসের হার ৭৬ দশমিক ২০ ও কারিগরি বোর্ডে ৭৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
এবার ১৭ লাখ ৮১ হাজার ৯৬২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৭২২ জন।
নীতিমালা অনুযায়ী, মফস্বল/পৌর (উপজেলা) এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশন চার্জসহ সর্বসাকুল্যে এক হাজার টাকা, পৌর (জেলা সদর) এলাকায় ২ হাজার টাকা এবং ঢাকা ছাড়া অন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩ হাজার টাকার বেশি ফি নেওয়া যাবে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী ভর্তিতে ৫ হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও এমপিও বহির্ভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেয়ার জন্য ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফি বাবদ বাংলা মাধ্যমে ৯ হাজার টাকা এবং ইংরেজি মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। উন্নয়ন খাতে কোনো প্রতিষ্ঠান ৩ হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ফি যতদূর সম্ভব মওকুফ করতে বলা হয়েছে নীতিমালায়।
কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনুমোদিত ফির বেশি নেয়া যাবে না উল্লেখ করে নীতিমালায় বলা হয়েছে, ভর্তি নীতিমালার ব্যত্যয় ঘটানো হলে বেসরকারি কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পাঠদানের অনুমতি বাতিলসহ এমপিওভুক্তি বাতিল করা হবে। সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিভাগীয় সদরের কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কলেজের ৮৯ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অবশিষ্ট ১১ শতাংশ আসনের মধ্যে ৩ শতাংশ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় সদরের বাইরের এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য, ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্ত দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী এবং স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্দের সদস্যদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
এছাড়া এবার থেকে প্রবাসীদের সন্তান এবং বিকেএসপির শিক্ষার্থীর জন্য শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ করে কোটা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বিজ্ঞান শাখা থেকে উত্তীর্ণরা যে কোনো বিভাগে ভর্তি হতে পারবে। মানবিক শাখা থেকে উত্তীর্ণরা মানবিকের পাশাপাশি ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ভর্তি হতে পারবে। ব্যবসায় শিক্ষায় শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে ভর্তি হতে পারবে।
নীতিমালা্য় বলা হয়েছে, বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে সমান জিপিএ প্রাপ্তদের মেধাক্রম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সাধারণ গণিত, উচ্চতর গণিত অথবা জীববিজ্ঞানে প্রাপ্ত জিপিএ বিবেচনায় আনা হবে। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে সমান জিপিএ প্রাপ্তদের ভর্তির ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলায় অর্জিত গ্রেড পয়েন্ট বিবেচনা করা হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, এক বিভাগের প্রার্থী অন্য বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে গ্রেড পয়েন্ট একই হলে সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা যাবে। এরপরও জটিলতা হলে ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয়ে অর্জিত পয়েন্ট বিবেচনায় আনতে হবে। স্কুল ও কলেজ সংযুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকারভিত্তিতে নিজ প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবেন।