মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট>> মংলা-ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ চ্যানেল উদ্বোধনের মাধ্যমে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া তিনি সরকারের নিজস্ব অর্থায়ানে দেশের বেসরকারি শিপইয়ার্ডে নির্মিত বিআইডব্লিউটিএ’র ১১টি ড্রেজার ও মংলা অত্যাধুনিক সাইলোর (খাদ্য গুদাম) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের অপরপ্রান্ত বাগেরহাটের জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আশোক মাধব রায়, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর এম মোজাম্মেল হকসহ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে মংলা-ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ চ্যানেলটি উন্মুক্তের ফলে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে সব ধরনের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল বন্ধ হবে। এতে দূষণ থেকে মুক্ত থাকবে বিশ্বের বৃহত্তম সংরক্ষিত এই ম্যানগ্রোভ বনটি। রক্ষা পাবে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য-প্রাণ প্রকৃতি। এছাড়া অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে ৮৬ কিলোমিটার দূরত্ব কম ঘুরতে হবে। ফলে সময় ও খরচের সাশ্রয় হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারত আন্তর্জাতিক নৌ প্রটোকলভুক্ত বাগেরহাটের মংলা-ঘষিয়াখালী ৩১ কিলোমিটারের নৌ চ্যানেলটির ২৬ কিলোমিটার পলি পড়ে ভরাট হয়ে যায়। এই নৌ চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পর থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সুন্দরবনের শ্যালা নদী দিয়ে অভ্যন্তরীণ ও বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল করতো। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ে নির্দেশ উপেক্ষা করে প্রায় চার বছর ধরে সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে এসব জাহাজ চলাচল করে আসছিল।

ওই সময়ে সুন্দরবনের নদীতে একের পর এক তলা ফেটে সার, কয়লা ও তেলবাহীসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক লাইটারেজ জাহাজডুবির ঘটনা ঘটে। এতে অস্তিত্ব সংকটে পড়ে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সংরক্ষিত সুন্দরবন। শ্যালা নদীতে অয়েল ট্যাঙ্কার ডুবে সুন্দরবনে তেল ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বব্যাপী শুরু হয় তোলপাড়। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য-প্রাণ প্রকৃতি বাঁচাতে ছুটে আসতে হয় খোদ জাতিসংঘের ইউনেস্কোর একদল বিশেষজ্ঞদের। এই অবস্থায় সুন্দরবন বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশে গতিপায় মংলা-ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ চ্যানেল ড্রেজিংএ।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, মংলা-ঘষিয়াখালী নৌ চ্যানেলের ড্রেজিং কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের জুন মাসে। ভরাট হয়ে যাওয়া ২৬ কিলোমিটার নৌপথটি ১৩ থেকে ১৪ গভীরতা ও ২০০ থেকে ৩০০ ফুট প্রসস্থতায় খনন করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ’র ১২টি ও বেসরকারি ৬টিসহ সর্বমোট ১৮টি ড্রেজার দিয়ে ১৮১ দশমিক ৮০ লাখ ঘনমিটার পলিমাটি ড্রেজিং করা হয়েছে। বর্তমানে ড্রেজিংকৃত অংশে ফের পলি জমে ভরাটের কারণে বিআইডব্লিউটিএ’র ৩টি ও বেসরকারি ৫টিসহ ৮টি ড্রেজার দিয়ে সংরক্ষণ খননের আওতায় আরও ৬২ দশমিক ১২ লাখ ঘনমিটার পলিমাটি পুনখনন করা হয়েছে। বর্তমানেও ড্রেজিংকৃত অংশে ৮টি ড্রেজার দিয়ে পুনখনন কাজ চলমান রাখা হয়েছে। গত বছরের মে মাস থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় পরীক্ষামূলকভাবে নৌচলাচলের জন্য চ্যানেলটি খুলে দেয়। বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রমজানপুর এলাকায় একটি ‘লুপকাট’ করায় মংলা-ঘষিয়াখালী নৌ চ্যানেলটির দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার কমেছে।

প্রকাশক সম্পাদক : জাহাঙ্গীর কবির লিটন
এলাহী মার্কেট , ২য় তলা, বড় মসজিদ গলি, ট্রাংক রোড,ফেনী।
jagofeni24@gmail.com
© 2016 allrights reserved to JagoFeni24.Com | Desing & Development BY PopularITLtd.Com, Server Manneged BY PopularServer.Com