ডেস্ক রিপোর্ট» ভ্রাম্যমাণ আদালতে এক স্কুলছাত্রকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ায় টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাকসুদুল আলমকে প্রত্যাহার করে ঢাকা বিভাগের বাইরে বদলির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই শিক্ষার্থীর সাজা বাতিল করে তাকে খালাস দিয়েছেন আদালত। তাছাড়া ওই শিক্ষার্থীর আদালতে দেওয়া বক্তব্য অভিযোগ হিসেবে গ্রহণ করে টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে ইউএনওর পক্ষে আইনজীবী শ. ম. রেজাউল করিম ও ওসির পক্ষে নুরুল ইসলাম সুজন এমপি শুনানি করেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্থানীয় সংসদ সদস্য অনুপম শাজাহান জয়ের ব্যাপারে ‘অবমাননাকর’ মন্তব্য করায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালনকারী ইউএনও স্থানীয় স্কুলশিক্ষার্থী সাব্বির শিকদারকে এই দণ্ড দেন। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ২০ সেপ্টেম্বর একটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত হয়।
সেই পত্রিকার কপি আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতের নজরে আনেন। এরপর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ইউএনও ও ওসিকে ২৭ সেপ্টেম্বর আদালতে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেন। ওইদিনই কারাদণ্ডপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষার্থীকে আদালত জামিনে মুক্তির নির্দেশও দেন।
২৭ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত দিনে ইউএনও ও ওসি দণ্ড প্রদানের বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা দেন। অপরদিকে স্কুলছাত্র নিজের ওপর করা নির্যাতনের বর্ণনা দেন। শুনানি শেষে আদালত ১৮ অক্টোবর সেই আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন। সেই অনুযায়ী আদালত মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) এই আদেশ দিলেন।
পত্রিকার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, টাঙ্গাইলের সখিপুরে প্রতীমা বঙ্কি পাবলিক হাই স্কুলের শিক্ষার্থী সাব্বির শিকদারকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ইউএনও রফিকুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। সাব্বির প্রতিমা বঙ্কি গ্রামের বাসিন্দা শাহিনুর আলমের ছেলে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, এর আগের দিন টাঙ্গাইল-৮ বাসাইল-সখিপুর আসনের সংসদ সদস্য অনুপম শাজাহান জয় ওই বালকের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেন। দণ্ডের পর ১৯ সেপ্টেম্বর ওই বালককে জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ‘নবম শ্রেণি পড়ুয়া’ ওই ছেলেটি ফেসবুকে সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছেন বলে ওই ম্যাজিস্ট্রেট জানান। ওই বালকের বয়স ১৯ বছর বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রতিবেদনে ওসি জিডির বরাত দিয়ে বলেন, ওই ছেলে সংসদ সদস্য অনুপম শাহজাহানকে মেসেঞ্জারে হুমকি দেয় যে, ‘আপনার সময় ফুরিয়ে আসছে’। আর ম্যাজিস্ট্রেট সূত্রে উল্লেখ করা হয়, তাকে তথ্য প্রযুক্তি আইনে এই দণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে আইনের কোন ধারায় দণ্ড দেওয়া হয়েছে তা তিনি উল্লেখ করেননি।