ডেস্ক রিপোর্ট» নৌকাসদৃশ সুবিশাল মঞ্চ। চারপাশে এলইডি মনিটর। আর সামনে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিস্তীর্ণ প্রাঙ্গণ। সে মঞ্চেই নির্ধারিত হবে, দেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরবর্তী তিন বছরের কাণ্ডারি। সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের পাশাপাশি এ মঞ্চে আরও থাকছে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
দেশের বরেণ্য শিল্পীদের পরিবেশনায় উঠে আসবে বাংলার উদ্ভব থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতিটি পর্ব। যেখানে উচ্চারিত হবে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাথা, পরিবেশিত হবে পল্লীবাংলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা মধুর সব সুর। ফলে রাজনৈতিক বক্তব্য, প্রতিনিধি নির্বাচন সুরের মিশেলে দলটির ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলনের দুইদিনের আয়োজন সাজানো হয়েছে।
জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে ইতোমধ্যেই গঠন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক উপকমিটি। যার আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন দলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আর সদস্য সচিব হিসেবে থাকছেন সিরাজগঞ্জের সংসদ সদস্য চয়ন ইসলাম।
সম্মেলনের সাংস্কৃতিক আয়োজন প্রসঙ্গে আসাদুজ্জামান নূর রবিবার (০২ অক্টোবর) দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু রাজনৈতিক দল নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এ দেশের সংস্কৃতি। সংস্কৃতিবান্ধব এ দলটির জাতীয় সম্মেলনে সে জন্য রাখা হয়েছে বর্ণাঢ্য আয়োজন। যা মুগ্ধ করবে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অতিথিদের- এমনটাই আমাদের চাওয়া।
তিনি জানান, ২২ অক্টোবর উদ্বোধনী দিনে জাতীয় সঙ্গীত ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হবে এ সম্মেলন। এর পর কবি কামাল চৌধুরীর লেখা ও বাপ্পা মজুমদারের সুর করা সম্মেলন সঙ্গীত পরিবেশিত হবে। এ গানের প্রতিটি লাইনে থাকবে আগামী দিনের বাংলাদেশের কথা। যা সম্মিলিতভাবে পরিবেশন করবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও দেশের বিভিন্ন সঙ্গীত সংগঠনের শিল্পীরা। যার নির্বাচনের কাজ করছেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী ও চয়ন ইসলাম।
আসাদুজ্জামান নূর বলেন, যদি উদ্বোধনী আয়োজনে সময় পাই তাহলে দেশের গান, গণসঙ্গীত ও মুক্তিযুদ্ধের গান পরিবেশন করা হবে। আমাদের ইচ্ছে আছে, দেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিল্পীদের পরিবেশনা রাখারও। যাতে করে বিদেশি অতিথি ও দেশের বিভিন্ন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারেন। তবে এসব আয়োজন এখনো চূড়ান্ত নয়। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা তার সিদ্ধান্ত জানানোর পর, সবকিছু চূড়ান্ত করা হবে।
জানা গেছে, সম্মেলনের উদ্বোধনী দিন সন্ধ্যায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত অতিথিদের জন্য থাকবে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। সেখানে গান, কবিতা পাঠ ছাড়াও দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নির্ভর তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে।
সম্মেলনের মঞ্চসজ্জা সমন্বয়ক ও চারুশিল্পী সংসদের সভাপতি মনিরুজ্জামান জানান, তার তত্ত্বাবধানে এক শ’ চারুশিল্পী মঞ্চসজ্জার কাজ করছে। মঞ্চসজ্জার কাজ শুরু হবে ৫ অক্টোবর। ২০ অক্টোবরের আগেই সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে এটা দলীয় ঐতিহ্যের ভাবনা থেকেই মঞ্চটি সাজানো হয়েছে। কিন্তু বৃহত্তর দৃষ্টিতে দেখলে বোঝা যাবে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ভাবনাও এখানে স্থান পেয়েছে।