পরশুরামের মূহুরী-কহুয়া পাড়ের ২ লক্ষাধিক মানুষের মনে আতংক

বিশেষ প্রতিনিধি»টানা বর্ষন ও উজানের পাহাড়ি ঢলে মূহুরী-কহুয়া নদীর পানিতে গত ১ মাসে ৩ বার প্লাবিত হয়েছে পরশুরাম ফুলগাজীর ৩০ গ্রাম।মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধের ৯টি স্থানে সৃষ্টি হয় ভাঙ্গন।এসব ভাঙ্গন স্থায়ীভাবে মেরামত না করায় আতংকে রয়েছে ফেনীর উত্তরাঞ্চলের মূহুরী-কহুয়া নদী পাড়ের দুই লক্ষাধিক মানুষ। তাদের দাবি স্থায়ী বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মান। সূত্র জানায়,চলতি মৌসুমে টানা বর্ষন ও ভারতের পাহাড়ী ঢলের পানিতে মূহুরী উত্তর শালধর,দক্ষিন শালধর,উত্তর দৌলতপুর,কিসমত ঘনিয়া মোড়াসহ ৯টি অংশে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পরশুরাম উপজেলার কালিকৃষ্ণ নগর, কোলাপাড়া, বেড়াবাড়িয়া, বাউরখুমা, খোন্দকিয়া, অলকা, নোয়াপুর, দূর্গাপুর, মালিপাথর,রাজষপুর,উত্তর শালধর,দক্ষিন শালধর সাতকুচিয়া, রামপুর, ধনীকুন্ডা, ফুলগাজী উপজেলার পশ্চিম ঘনিয়া মোড়া,পূর্ব ঘনিয়া মোড়া,জয়পুর,সাহাপাড়া.বৈরাগপুর,বিজয় পুর,বরইয়া,দক্ষিন দৌলতপুর, উত্তর দৌলতপুর, পেচিবাড়িয়া,কহুমা সহ প্রায় ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় ভেসে কয়েক হাজার পুকুরের মাছ ও সবজি ক্ষেত।

পানিতে পঁচে গেছে ১০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন।ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে উঠার পর আবারও বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দেওয়ায় আতংকে দিন কাটছে মূহুরী-কহুয়া নদী পাড়ের মানুষদের। জানা গেছে,পরশুরামের ভারত সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত হচ্ছে মূহুরী-কহুয়া ও সিলোনিয়া নদী।পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার প্রায় ৪০ টি গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে গেছে নদী ৩টি।

৩ দফা বন্যায় মানুষ আবারও বন্যার আশংকায় দিন কাটাচ্ছেন।ফুলগাজীর দক্ষিন দৌলতপুর,বরইয়া,জগতপুর ও পরশুরামের শালধরসহ বিভিন্ন স্থানের বেড়িবাঁধে ফাটল ও বাঁধ ভেঙ্গে ধসে পড়ায় আতংকে রয়েছেন এলাকাবাসী। দেখা দিয়েছে মূহুরী কহুয়া নদীর বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থানে ফাটল। যে কোন সময় ধসে পড়তে পারে এসব বেড়িবাঁধ। সর্বশেষ গত ২৭ আগষ্টে মূহুরী নদীর উত্তর শালধর,উত্তর দৌলতপুর,কিসমত ঘনিয়া মোড়া অংশে ভয়াবহ ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়।ভাঙ্গন কবলিত এসব বেড়িবাঁধ এখনো মেরামত না করায় সামান্য বৃষ্টি হলে পানিতে প্লাবিত হচ্ছে আশপাশের গ্রামগুলো চিথলিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন মোল্লা জানান,৩ দফা বন্যায় উত্তর শালধর, রাজষপুর,মালিপাথর পানিতে তলিয়ে যায়।নিয়মিত এ পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে তারা সরকারের কাছে স্থায়ী বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মানের দাবি জানান।

এলাকাবাসীর অভিযোগ,বেড়িবাঁধ তৈরির সময় নদী থেকে উত্তোলিত বালু ব্যবহার করা হয়েছে।বেড়িবাঁধের গোড়া থেকে বালু উত্তোলন করে বাঁধ নির্মান করায় বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে বাঁধ ভেঙ্গে পুনরায় গর্ত তৈরি হচ্ছে ও ফাটল দেখা দিচ্ছে।সিডিউল মত মাটি না দেওয়া ও দায়সারা ভাবে কাজ করায় বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিচ্ছে। এর জন্য এলাকাবাসী পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের দায়ি করেছেন। পশ্চিম ঘনিয়া মোড়া গ্রামের মিজানুর রহমান জানান,বৃষ্টি হলেই কিসমত ঘনিয়া মোড়া গ্রামের মূহরী নদীর ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে আশপাশের গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়।পানি বন্দী হয়ে পড়ে কয়েক হাজার মানুষ।এছাড়া পশ্চিম ঘনিয়া মোড়া অংশে হাটু পরিমান পানি থাকায় ফেনী-পরশুরাম সড়কের যোগযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কহিনুর আলম জানান,মূহুরী-কহুয়া নদীর বেড়িবাঁধে যাতে নতুন করে ভাঙ্গন সৃষ্টি না হয় সে জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা কাজ করছেন। পানি কমে গেলে বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন কবলিত অংশগুলো মেরামত করা হবে। এলাকাবাসীর দাবি,পুনরায় বন্যা আসার আগেই বেড়িবাঁধগুলো মেরামত করা হোক। ছবি সংযুক্তঃ মুহুরী নদীর বেড়িবাধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করছে উত্তর দৌলতপুর গ্রামে।

প্রকাশক সম্পাদক : জাহাঙ্গীর কবির লিটন
এলাহী মার্কেট , ২য় তলা, বড় মসজিদ গলি, ট্রাংক রোড,ফেনী।
jagofeni24@gmail.com
© 2016 allrights reserved to JagoFeni24.Com | Desing & Development BY PopularITLtd.Com, Server Manneged BY PopularServer.Com