হারুনুর রশিদ আরজু»ছাত্র জীবনে ‘দানবীর হাজী মুহাম্মদ মুহসীন’ সম্পর্কে সামান্য জানার সুযোগ হয়েছিল। এই টুকুই জানা গেছে যে তিনি একজন ‘দানবীর’ ছিলেন। মনে সাধারণ ধারণা ছিলো তিনি হয়তো পারিবারিকভাবে ধনী ছিলেন তাই পিতার রেখে যাওয়া সম্পদের অধিকারী হন। কিন্তু তিনি কেমন করে ধনবান হলেন সেই গল্প বা তার জীবনের ইতিহাস জানার সুযোগ পাঠ্য পুস্তকে রাখা হয়নি। কেবল ছোট অনুচ্ছেদ আকারে তার দান সম্পর্কিত দুই-একটা গল্পই পাঠ্য বইতে রাখা হয়েছে। যেমনঃ একদিন এক চোর তার বাড়িতে এলো। তিনি দেখলেন তাকে ধরলেন না, মারলেন না বরং তার দুঃখের কথা শুনে তাকে অনেক টাকা-পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করলেন। কিংবা দানবীর মুহসীন গভীর রাতে টাকা নিয়ে ছদ্মবেশে বের হতেন। এই জাতীয় দু’্একটি কাহিনী পাওয়া যায় বইতে। তার হাতের লেখা অসাধারণ সুন্দর ছিল। নিজ হাতে কোরআন নকল করে তা বিক্রি করতেন। সেই অর্থ দিয়ে তিনি গরিব ও দুঃস্থজনদের সাহায্য করতেন। মুহসীনরা ছিলেন শিয়া স¤প্রদায়ভুক্ত মুসলমান।
মুহসীন লেখক ছিলেন না, কবি ছিলেন না, সাহিত্যিক ছিলেন না, রাজনীতিক ছিলেন না, শিল্পী ছিলেন না, পীর বা অলি কামেল ছিলেন না, বিজ্ঞানীও ছিলেন না। তিনি কোনো নোবেল পুরষ্কারও পাননি। তারপরও তার এতো খ্যাতি অর্জন হয়েছে তাও আবার উপমহাদেশ জুড়ে, কিভাবে? শুধু মানুষকে দান করেই তিনি এতোটা খ্যাতি অর্জন করেছেন! যা কয়েক শতাব্দী পরও কালের গর্ভে হারিয়ে যায় নি। তার একটাই পরিচয় তিনি দানবীর। এই উপমহাদেশে একমাত্র দানবীর বললে হাজী মুহাম্মদ মুহসীনের নাম উচ্চারিত হয়। এমনকি লোকে কাউকে দানশীল বুঝাতে এখনও হাজী মুহসীন এর সাথে তুলনা করেন।
তাই সব সময় মনে ভাবনা জাগতো এমন একজন দানবীর ব্যক্তি তিনি কেমন করে ধনী হলেন? এটা যদি জানতে পারতাম ভালো হতো। যাক অনেক পুস্তক ঘেটে মুহসীনের জীবন ও জন্ম ইতিহাস সম্পর্কে কিছুটা জানার সুযোগ হয়েছে। এটা জেনে অবাক হলাম যে, হাজী মুহসীন নিজে থেকে ধনী হতে চাননি। কিংবা তিনি অতীব ধনী পরিবারে জন্ম গ্রহণও করেন নি। কিন্তু ভাগ্যগুণে তিনি অপরিমেয় ধন-সম্পত্তির অধিকারী হয়েছিলেন। তার ধন-সম্পত্তি প্রাপ্তির গল্পটি অত্যন্ত চমকপ্রদ এবং অবিশ্বাস্য। যাকে বলে কপালে থাকলে ঠেকায় কে জাতীয় ব্যাপার।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ (বর্তমান নাম বাংলা) প্রদেশের হুগলী জেলায় ১৭৩২ খ্রিষ্টাব্দে মুহসীনের জন্ম। মানে আজ থেকে ২৮৪ বছর পূর্বে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। এতোদিন পরও তার নাম উজ্জ্বল হয়ে জ্বলছে। মুহসীনের আদি নিবাস ভারতবর্ষে ছিলো না। তার আদি নিবাস ছিলো পারস্যে অর্থাৎ ইরানে। তার পিতা আগা মুহাম্মদ ফয়জুল্লাহ’র পূর্ব পূরুষরা পারস্য থেকে ভাগ্য বদলাতে এখানে এসেছিলেন। তবে তার মাতা জয়নব খানম ভারতেরই অধিবাসী ছিলেন। এই জয়নব খানমের গল্পটা আবার অন্য রকম। মুহসীনের পিতা আগা মুহাম্মদ ফয়জুল্লাহ মাতা জয়নব খানমকে কুমারী বিয়ে করেননি। জয়নব খানম ছিলেন আগা ফয়জুল্লাহর দ্বিতীয় স্ত্রী। তিনি জয়নব খানমকে যখন বিয়ে করেন তখন জয়নব খানম বিধবা ছিলেন এবং ১২বছরের এক কন্যা সন্তানের মা ছিলেন।
জয়নব খানমের পূর্ব স্বামীর নাম ছিলো আগা মোতাহার। ১৭০০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পারস্য থেকে ভাগ্যের অন্বেষণে ভারতবর্ষে এসেছিলেন। তখন দিল্লীর বাদশা ছিলেন আওরঙ্গজেব। তিনি বাদশার অধীনে খাজাঞ্চির পদে চাকরীতে যোগ দেন। তিনি ছিলেন মেধাবী সৎ এবং দক্ষ। তার যোগ্যতায় খুশী হয়ে বাদশা তাকে যশোর এবং নদীয়া জেলার অনেকগুলো জায়গীর দান করেন। জায়গীরদারী পেয়েই তিনি দিল্লি থেকে হুগলী আসেন স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য। এখানে আসার কিছুদিন পর তিনি ‘দোরদানা খানম’ নামে এক রমণীকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে কোনো সন্তান এলো না। বিশাল সম্পদের মালিক অথচ কোনো সন্তান নেই। এমন একটি কষ্টের অবস্থায় বাধ্য হয়ে তিনি সন্তান লাভের আশায় আরেকটি বিয়ে করলেন, তার নাম জয়নব খানম (যিনি পরবর্তীতে মহসীনের মা)। দুঃখের বিষয় এই দ্বিতীয় স্ত্রী তথা জয়নব খানমের ঘরেও সন্তান এলো না। আগা মোতাহার অত্যন্ত ব্যথিত হলেন। নিরাশ হয়ে মনকে শান্তনা দেয়ার জন্য তিনি একটা পোষ্যপুত্র গ্রহণ করলেন। এতেও তার মনে শান্তি এলো না। এদিকে দুই স্ত্রীর ঝসড়া-ফ্যাসাদ দিনকে দিন বেড়েই চললো। আগা মোতাহারের মনের অবস্থা যখন বিষাদে পরিপূর্ণ তখন আল্লাহ তার দ্বিতীয় স্ত্রী জয়নব খানমের গর্ভে সন্তান দিলেন। তার এক কন্যা সন্তান জন্ম নিলো, নাম রাখা হলো মুন্নুজান।
পাঠক গল্পের প্যাচ অনেক জটিল। তাই প্রতিটা চরিত্র ধাপে ধাপে এগিয়ে আসছে। আপনারা ধৈর্য হারাবেন না।
তাহলে আমরা জানলাম মুন্নুজান জয়নব খানমের গর্ভজাত সন্তান। মুন্নুজান বড় হতে লাগলো। মুন্নুজান সুন্দরী, বুদ্ধিমতি এবং শান্ত চরিত্রের ছিল। পিতা আগা মোতাহার তাকে খুব আদর করতেন ভালোবাসতেন। এই কন্যাটি ছিল তার প্রাণ। যখন তার বয়স ১২বছর তখন একদিন মুন্নুজানের পিতা আগা মোতাহার তাকে কাছে ডেকে বললেন, ‘তোমার গলায় আমি একটা মাদুলি (তাবিজের মত) পরিয়ে দিলাম। এটা মহামূল্যবান, এর অনেক দাম। আমার মৃত্যুর পর তুমি এটা খুলবে এবং কী আছে দেখে নিবে।’ মুন্নুজানও পিতাকে খুব ভালোবাসাতেন। তাই পিতার আদেশ তিনি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চললেন। মুন্নুজানের পিতা তথা আগা মোতাহার ১৭২৯ সালে মৃত্যুবরণ করলেন। পিতার আদেশমত মুন্নুজান তাকে দেয়া মাদুলি ভেঙ্গে দেখলেন পিতার সমস্ত সম্পত্তি তথা জমিদারী কন্যাকে দান করে গেছেন। এটা দেখে মাতা জয়নব খানম সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ায় খুশী হতে পারলেন না বরং তিনি অত্যন্ত ক্ষব্ধ হলেন। কিন্তু তিনি ভাবলেন মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। কোনো ভুল করা যাবে না বিশেষত এই মেয়েকে হাতছাড়া করা যাবে না। জয়নব খানম ভাবতে লাগলেন কী করে সম্পত্তি হাতে আনা যায়। ভাবলেন এখানে থাকলে মেয়ে সতীনকে (সৎমাকে) সম্পত্তির ভাগ দিতে পারে। তাই নিজেই বিয়ের চিন্তা করলেন। তিনি ‘হাজী আগা মুহাম্মদ ফয়জুল্লাহ’ নামে এক সম্ভান্ত ব্যক্তিকে বিয়ে করলেন। জয়নব খানম আগা ফয়জুল্লাহর দ্বিতীয় স্ত্রী। বিয়ের পর তিনি মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন। মুন্নজানের বয়স তখন ১২ বছর। একবছর পর নতুন স্বামীর ওরসে জয়নব খানমের একটি পুত্রসন্তান জন্ম গ্রহণ করে। সেটা ১৭৩২ সালের ১লা আগস্ট। নবজাতকের নাম রাখা হলো ‘মুহাম্মদ মুহসীন’।
মুন্নুজান সৎ ছোটো ভাইকে পেয়ে খুব আনন্দিত হলেন। তাকে কোলেপিঠে করে মানুষ করতে লাগলেন। ভাইকে মক্তবে নিয়ে যান। আর একটু বড় হওয়ার পর ভর্তি করালেন মাদ্রাসায়। ইতোমধ্যে মুন্নুজানের বিয়ে না দিয়ে বাবা-মা দু’জনই অল্প সময়ের ব্যবধানে মারা গেলেন। পড়ালেখায় মুহসীনের উন্নতি হতে লাগলো। এবার পাঠিয়ে দেয়া হলো মুর্শিদাবাদ শহরে। মুর্শিদাবাদ তখন বাংলার রাজধানী। শিক্ষা জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রস্থল ছিলো মুর্শিদাবাদ। এখানে একটা প্রসিদ্ধ মাদ্রাসায় ভর্তি হলেন। মুহসীন লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি সংগীত, অশ্ব ও অস্ত্র চালনা শিখেন। হুগলিতে থাকতেই তিনি সেতার ও কণ্ঠসংগীতে তালিম নেন। তিনি কুস্তি, লাঠি ও তলোয়ার খেলায় পারদর্শী ছিলেন।
মুর্শিদাবাদে পড়াকালে মুহসীনের মনের গভীরতা, মেধা, চরিত্র দেখে মাদ্রসার ওস্তাদগণ মুগ্ধ হলেন। চারদিকে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়লো। এই সুনামের কথা মুর্শিদাবাদের নবাবের কানেও পৌঁছলো। নবাব তার অধীনে একটি সরকারী চাকরীর পদ গ্রহণের প্রস্তাব দিলেন। মুহসীন নবাবের দেয়া চাকুরী গ্রহণ করলেন না। কারণ বাড়িতে বড় বোন একা রয়েছে। তাই মায়ের সমান বড় বোনকে একা রেখে এখানে থাকতে রাজি হলেন না।
এদিকে বড় বোন মুন্নুজানের বিশাল সম্পত্তির লোভে কিছু কুচক্তিমহল সম্পত্তি আত্মসাৎ করার যড়যন্ত্র করতে লাগলো। মুন্নুজান একা অবিবাহিত মেয়ে মানুষ। কী করবে উপায় না পেয়ে আদরের ভাই মুহসীনকে পত্র লিখে বাড়ি আসার অনুরোধ করলেন। পত্র পেয়ে মুহসীন বোনকে রক্ষার তাগিদে নবাবের চাকুরীর সুযোগ ছেড়ে দ্রæত হুগলী চলে এলেন। ভাইকে কাছে পেয়ে মুন্নুজান খুশী হলেন এবং চিন্তামুক্ত হলেন। বোনের বিশাল সম্পত্তি দেখাশোনার ভার দেওয়া হয় মুহসীনকে। এবার মুহসীন মেনে গেলেন বোনের বিয়ের কাজে। বোনকে নবাবের ফৌজদার সালাউদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে দিলেন। ইতোমধ্যে মহসীন নিজের বয়স ৩৫বছর পার করে দিলেন। তাই আর ঘরসংসার করতে মন চাইলো না। পায়ে হেঁটে চলে গেলেন মক্কায় হজ্বব্রত পালন করতে। মক্কা থেকে ফিরতি পথে দেশ ভ্রমণে যাওয়া শুরু করলেন। একাধারে ইরাক ইরান তুরস্ক সিরিয়া মিশর প্রভৃতি মুসলিম দেশে ভ্রমণ শেষে দীর্ঘ ২৭বছর পর ১৭৯৪ সালে দেশে ফিরে আসেন। ভারতে ফিরে তিনি প্রথমে যান লখনৌ। সেখান থেকে মুর্শিদাবাদে স্থায়ীভাবে থাকার চিন্তা করেন। তার পান্ডিত্য এবং গুণের খবর মুর্শিদাবাদের নবাবের কাছে পৌঁছে। নবাব তাকে দরবারে ডেকে পাঠান। কিন্তু মুহসীন নবাবের দরবারে যাননি। বরং নবাব নিজেই মুহসীনের কাছে এসে দেখা করেন।
ইতোমধ্যে বোন মুন্নুজানের স্বামী গত হয়েছেন। মুন্নজানের জীবনে কোনো সন্তান এলো না। মন্নুজান নিজেও বার্ধক্যে উপনীত। তাই কয়েকবার মুহসীনকে হুগলিতে ফিরে এসে তার বিষয়সম্পত্তি বুঝে নেয়ার জন্য খবর দিয়েও তিনি সাড়া পাননি। কারণ মুহসীন ইতোমধ্যে দরবেশের জীবনই বেছে নিয়েছেন। শেষপর্যন্ত বোনের বৃদ্ধ বয়স, একাকিত্ব ও অসহায় অবস্থার কথা ভেবে মুহসীন হুগলী আসতে রাজি হলেন। এবার ভাইকে ডেকে বিশাল সম্পত্তি সব লিখে দিলেন। জমির পরিমাণই ছিলো প্রায় ১ লাখ ৬৭ হাজার একর (১একর =১০০শতাংশ, বা ১ কানি)। ১৮০২ সালে মুন্নুজান তার সব সম্পত্তি লন্ডনের সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে মুহসীনকে দান করেন। এরপর ১৮০৩ সালে মুন্নুজান মৃত্যুবরণ করেন।
এভাবেই লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে বিশাল সম্পত্তি দানবীর মুহসীনের হাতে আসে। মুহসীনের অধিকাংশ সম্পত্তি ছিলো বাংলাদেশের যশোর ও খুলনায়। মহসীন ১৮০৬ সালের ২০শে এপ্রিল হুগলীতে তার পিতার এবং বোনের প্রদত্ত সমস্ত সম্পক্তি ধর্ম ও জনহিতকর কাজের জন্য এক অছিয়তনামা রেজিস্ট্রির মাধ্যমে দান করেন। তিনি তাঁর দুই বন্ধু রজব আলী খাঁ ও সাকির আলী খাঁকে যুগ্মভাবে এই ওয়াকফ সম্পত্তি তদারকির জন্য মোতওয়াল্লি নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু মুহসীনের মৃত্যুর পর তারা এবং তাদের উত্তরাধিকারীরা এ সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা চালায়। অবশেষে এই সম্পত্তি তৎকালীন ইংরেজ সরকার দায়িত্বে নিয়ে আসে। সেকালের বিশিষ্ট হিন্দু-মুসলমানদের অনেকেই মুহসীন ফান্ডের বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করেন। ১৮১২ সালের ২৯শে নভেম্বর দানবীর হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হুগলীতে ইন্তেকাল করেন। হুগলীর ইমামবাড়ায় মুহসীনের সমাধি রয়েছে। মুহসীন ফান্ডের টাকায় ১৮৩৬ সালের ১ আগস্ট হুগলি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। মহসীনের মৃত্যুর পর তার বিশাল বিত্ত থেকে হুগলীর ইমামবাড়ায় তৈরী হয় বিশাল মসজিদ। যা ৪২ বিঘা জমির উপর নির্মিত হয়। তখনকার সময়ে এতে খরচ হয় প্রায় ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এর সামনের দিকে দু’টি বিশালকায় চূড়া রয়েছে যার উচ্চতা ১৫০ফুট। ১৫২টি সিঁড়ি পার হতে হয় এই চূড়ায় উঠতে। এই চূড়ার মাঝে রয়েছে একটি বিশাল ঘড়ি। যাকে বলা হয় বিগবেন ঘড়ি। এরকম আরেকটি ঘড়ি রয়েছে লন্ডনের বাকিংহাম প্রাসাদে। তৈরির পর থেকে এ পর্যন্ত নাকি ঘড়িটি কখনই নষ্ট হয়নি বা দু-এক মিনিটও ভুল সময় দেয়নি।
মুহসীনের ধনী হওয়ার এই গল্প মনে করিয়ে দেয় কোরআনে প্রদত্ত আল্লাহর ঘোষণা- “আর যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরী করে দেন। এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দিবেন যা সে কল্পনাও করতে পারবে না।” মানুষ ধন-সম্পত্তির জন্য কত কিছুই না করছে। চুরি করছে, ঘুষ খাচ্ছে, মিথ্যা বলছে, অন্যের হক মেরে খাচ্ছে, খুন পর্যন্ত করছ্। আসলে এসব চিন্তা হচ্ছে মানুষের নিজের ভয়। রিজিক নিজ দায়িত্বেই আসবে এটা সহজে চিন্তা করতে পারে না। মুহসীন রিজিকের পিছে ছুটেন নি। রিজিকের মালিকের পিছে ছুটেছেন জীবনভর। তাইতো রিজিক তার পিছু নিয়েছে। অথচ জয়নব খানম এই সম্পত্তির জন্য কত রাজনীতিই না করলেন। সম্পত্তি তার ভাগ্যে জুটেনি। যারা চিন্তাশীল তাদের জন্য হাজী মহসীনের জীবনের এই গল্পে অনেক শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে।
লেখকঃঃ প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।