ডেস্ক রিপোর্ট»দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা ঝালকাঠির এক স্কুল শিক্ষার্থীর চিঠির জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ওই শিক্ষার্থীর চাওয়া অনুযায়ী তার গ্রামের বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পথে থাকা নদীতে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন তিনি। ওই স্কুল শিক্ষার্থী শীর্ষেন্দু বিশ্বাস পটুয়াখালী সরকারি জুবিলি উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। খবর বিবিসি বাংলার।
গত ১৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে চিঠিটি লিখে পাঠিয়েছিল শীর্ষেন্দু; আর প্রধানমন্ত্রীর পাল্টা চিঠি তার স্কুলে পৌঁছায় ২০ সেপ্টেম্বর। যাতে দেখা যায়, চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী সাক্ষর করেছেন ৮ সেপ্টেম্বর।
শীর্ষেন্দুর মা শিলা রানী সন্নামত বিবিসিকে জানান, তার ছেলে ডাকযোগে চিঠিটি পাঠিয়েছিল। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একজন কর্মকর্তা ফোন করে জানান যে চিঠি তারা পেয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রী জবাব দিতে আগ্রহী। কোন ঠিকানায় চিঠি পাঠাবেন প্রধানমন্ত্রী, সেটিও তখন তিনি জেনে নেন।
শিলা রাণী আরও জানান, শীর্ষেন্দুর স্কুল থেকে তাদের জানানো হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রীর চিঠি এসে পৌঁছেছে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর স্কুলেই এক অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক এটি শীর্ষেন্দুর কাছে হস্তান্তর করবেন।
তিনি জানান, শীর্ষেন্দু তার একমাত্র সন্তান। সে একবার ঝালকাঠি থেকে পটুয়াখালীতে আসার সময় নদীতে ঝড় উঠলে প্রচণ্ড ভয় পায়। এরপর নিজে থেকেই চিঠিটি লিখে ডাকযোগে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে পাঠিয়ে দেয়।
শিলা রাণী উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অফিসে আমার ছেলের চিঠিটি সত্যিই যাবে আর তিনি জবাব দেবেন এটা তো স্বপ্নেও ভাবিনি। অনেক ভালো লাগছে আমাদের। এলাকার মানুষও খুব খুশি।’
শীর্ষেন্দুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বিবিসিকে বলেন, ‘একটি মাসুম বাচ্চার লেখার জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, এটি বিশাল ঘটনা আমাদের জন্য। এটা আসলেই বিরল।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিঠিটি ২৬ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে শীর্ষেন্দুর হাতে তুলে দেবেন জেলা প্রশাসক।
শীর্ষেন্দুর চিঠি আর প্রধানমন্ত্রীর জবাব
শীর্ষেন্দু তার চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছিল, তার গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি। স্কুল থেকে বাড়ি যেতে মির্জাগঞ্জে পায়রা নদী পার হতে হয়। কিন্তু নদীটিতে প্রচণ্ড ঢেউ থাকে। ফলে অনেক সময় নৌকা বা ট্রলার ডুবে যায় এবং অনেকে বাবা-মা হারায়।
চিঠিতে শীর্ষেন্দু জানায় যে, সেও তার বাবা-মাকে ভালোবাসে এবং তাদের কোনোভাবেই সে হারাতে চায় না। এজন্য নদীর ওপর একটি ব্রিজ বা সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া এই শিক্ষার্থী।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান যে, তিনি জানেন মির্জাগঞ্জ উপজেলায় পায়রা নদীটি অত্যন্ত খরস্রোতা এবং নদীটির বিষয়ে শীর্ষেন্দুর এই সচেতনতা তাকে মুগ্ধ করেছে।
শীর্ষেন্দুকে প্রধানমন্ত্রী তার চিঠিতে লেখেন, ‘মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীতে একটি সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তোমাকে আশ্বস্ত করছি।’
ঝালকাঠির স্কুল শিক্ষার্থীর চিঠির জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী
জাগোফেনী টুয়েন্টিফোরডটকম | আপডেট : September, 25, 2016, 4:26 pm