ডেস্ক রিপোর্ট»ট্যানারী সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদাগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএলএলএফইএ), বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) ও বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কীন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিএইচএসএমএ)কুরবানীর পশুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করেছে।
শুক্রবার সকালে রাজধানীতে আনুষ্ঠানিকভাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চামড়ার মূল্য নির্ধারণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ঘোষণা অনুযায়ী, রাজধানীর ভেতরে এবার লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৪০ টাকা। একইসাথে সারদেশে লবণযুক্ত খাসির চামড়া সর্বোচ্চ ২০ টাকা ও লবণযুক্ত বকরির চামড়া ১৫ টাকা নির্ধারন করা হয়েছে।
এর আগে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার মূল্য ৪০-৪৫ টাকা নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব দেওয়া হয়।
মন্ত্রণালয় সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে শুক্রবারের মধ্যে পুনরায় নির্ধারণের জন্য নির্দেশ দেয়।
বিএফএলএলএফইএ’র চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন বলেন, দেশের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে চামড়া অন্যতম। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এই খাত থেকে রপ্তানিবাবদ ১১৬ কোটি ১০ লাখ টাকার মার্কিন ডলার আয় হয়েছে। তারপরেও নতুন শিল্প নগরীতে কারখানা নির্ধারণ, যন্ত্রপাতি স্থানান্তরে বিপুল বিনিয়োগ, রপ্তানি বাজারে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের দাম কমে যাওয়ায় এই ব্যবসায় পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই সমস্যা উত্তোরনে সহজশর্তে ঋণ, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদ্যমান ঋণের সুদ মওকুফ, কর অবকাশ সুবিধা প্রয়োজন।
বিএইচএসএমএ সভাপতি হাজী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, চামড়া ভালো রাখার জন্য দ্রুত লবণ লাগাতে হবে। একই সঙ্গে একটি গরুর চামড়ায় কমপক্ষে ৮-১২ কেজি ও ছাগলের চামড়ায় ১-১.১৫ কেজি লবণ লাগানো দরকার। ৬ ঘন্টার মধ্যে এই লবণ না লাগানো হলে চামড়ার মাণ হ্রাস পায়। আধা বা ১ কেজি মাংস বাচাতে গিয়ে কসাইরা অনেক সময় চামড়া নষ্ট করে ফেলে, এদিকে সাবধান থাকতে হবে।
বিটিএ চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমেদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম ৩০-৩৫ শতাংশ দাম কমে গেছে। তবে আমরা ১০ শতাংশ দাম কমিয়ে চামড়ার দর নির্ধারন করেছি। এছাড়া বিভিন্ন জটিলতার কারনে রপ্তানির গ্রোথ কমে গেছে। যাতে গত বছরের অনেক চামড়া জমা রয়েছে।
এদিকে সাভারে চামড়া শিল্প পুরোপুরি প্রস্ততু না হওয়ায় কোরবানির চামড়া হাজারীবাগ ও সাভার দুই জায়গায় যাবে বলে জানিয়েছেন শাহীন আহমেদ। এক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হলে চামড়া পাচার হয়ে যেতে পারে। এছাড়া ভারতে গরু জবাই নিয়ে কড়াকড়ি থাকায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তৈরী হবে। এক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীকে তৎপর থাকতে হবে।
শাহীন আহমেদ বলেন, পরিবেশবান্ধব শিল্পনগরী গড়ে তুলতে ঋণ, গ্যাস, বিদ্যুত ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য গত বছর ট্যানারি ব্যবসায়ীরা ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দর নির্ধারণ করেছিলেন ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। আর ঢাকার বাইরে এর দর ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত মহিষের চামড়ার দর ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। খাসির চামড়া ২০ থেকে ২২ টাকা। আর বকরি ও ভেড়ার চামড়ার দর ছিল ১৫ থেকে ১৭ টাকা।
২০১৪ সালে ট্যানারি ব্যবসায়ীরা ঢাকায় প্রতিফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া কেনেন ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। ঢাকার বাইরে এ দর ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত মহিষের চামড়ার দর ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, খাসির চামড়া ৩০ থেকে ৩৫ টাকা ও বকরির চামড়ার দর ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা।
চামড়ার মূল্য নির্ধারণ হয়েছে
জাগোফেনী টুয়েন্টিফোরডটকম | আপডেট : September, 9, 2016, 8:59 am