মীর কাসেম আলীর রিভিউর পরবর্তী শুনানি রবিবার

ডেস্ক রিপোর্ট»একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাসেম আলীর রিভিউ শুনানি রবিবার পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চে রিভিউ শুনানির শুরুতে সময় আবেদন করেন মীর কাসেমের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। কিন্তু আদালত তার সময় আবেদন না মঞ্জুর করে রিভিউ শুনানি শুরু করতে বলেন। শুনানি শুরুর পর পরই তা রবিবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম উপস্থিত ছিলেন।
মীর কাসেম আলীর মামলাটি সবশেষ গত ২৫ জুলাই শুনানির জন্য উঠেছিল। ওই দিন তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন দুই মাস সময়ের জন্য আবেদন করেন। পরে আদালত এক মাস সময় মঞ্জুর করে ২৪ আগস্ট শুনানির নতুন দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৯ জুন মীর কাসেম আলী আপিলে মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন। ৮৬ পৃষ্ঠার আবেদনে ১৪টি যুক্তি দেখিয়ে ফাঁসির দণ্ড থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন তিনি। ওই আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করতে ২১ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ২৫ জুলাই দিন ধার্য করে তা পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন মতিঝিলে তার মালিকানাধীন দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করা হয় জামায়াতের এই ব্যবসায়ী নেতাকে। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার। ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের রায়ে মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে মীর কাসেম সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আপিল করেন। গত ৮ মার্চ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ ট্রাইব্যুনালে মীর কাসেম আলীকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। তবে ট্রাইব্যুনাল দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিলেও আপিল বিভাগ একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।
মীর কাসেমের বিরুদ্ধে আনীত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে তার আপিল আংশিক মঞ্জুর করে ৪, ৬ ও ১২ নম্বর অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আর ২, ৩, ৭, ৯, ১০, ১১ ও ১৪ নম্বর অভিযোগে আপিল নাকচ করে ট্রাইব্যুনালের রায়ই বহাল রেখেছেন আপিলি বিভাগ।
এর মধ্যে ১২ নম্বর অভিযোগে এই জামায়াত নেতা মৃত্যুদণ্ড থেকে অব্যাহতি পেলেও ১১ নম্বর অভিযোগ সর্বোচ্চ সাজাই বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। ৬ জুন এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের পর ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ট্রাইব্যুনাল থেকে লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানাসহ কারাগারে পাঠায় ট্রাইব্যুনাল। সেই মৃত্যু পরোয়ানা মীর কাসেম আলীকে পড়ে শোনায় কারা কর্তৃপক্ষ।
আইন অনুযায়ী রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে তা পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করার সুযোগ ছিল মীর কাসেমের সামনে। সেই অনুযায়ী ১৯ জুন তিনি রিভিউ আবেদন করেন। রিভিউতে তার আবেদন খারিজ হলে আর কোনো আইনি প্রতিকার তার থাকবে না। সে ক্ষেত্রে দোষ স্বীকার করে নিয়ে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে পারবেন। সেই আবেদন গৃহীত না হলে সরকারের নির্বাহী আদেশে কারা কর্তৃপক্ষ দণ্ড কার্যকর করবে।
মীর কাসেম আলী ষষ্ঠ ব্যক্তি যিনি মানবতাবিরোধী অপরাধে আপিলেও চূড়ান্তভাবে মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন। এর আগে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লা এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর একই ধরনের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
।। দি রিপোর্ট

প্রকাশক সম্পাদক : জাহাঙ্গীর কবির লিটন
এলাহী মার্কেট , ২য় তলা, বড় মসজিদ গলি, ট্রাংক রোড,ফেনী।
jagofeni24@gmail.com
© 2016 allrights reserved to JagoFeni24.Com | Desing & Development BY PopularITLtd.Com, Server Manneged BY PopularServer.Com